রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের এক গৃহবধুকে পতিতাবৃত্তির জন্য ভারতে পাচারের অভিযোগে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (জেলা জজ) আদালতের বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত বুলবুল মিয়া ভুলুকে (২৫) ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের ১৩ জুন কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার পরঅনাজি পলাশ বাড়ির ফবেদ আলীর ছেলে বুলবুল মিয়া ভুলুর সঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজারের এক হতদরিদ্র পরিবারের ২১ বছর বয়সী যুবতীর বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাস পরই স্বামী বুলবুল গৃহবধুকে পতিতাবৃত্তির জন্য ভারতে পাচার করেন।
এদিকে বোনের খোঁজে ওই গৃহবধুর ভাই ভগ্নিপতির বর্তমান ঠিকানা সিলেটের বাগবাড়ি নরসিংটিলা বাসায় আসেন। দীর্ঘ ৪-৫ মাস পর আবার বোনের খোঁজে ভাই তাদের ওই বাসায় গেলে কোনও সন্ধান পাননি। এক পর্যায়ে শাহজাহান মিয়া বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামি করে সিলেট কোতয়ালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পরে ২০১২ সালে রাজশাহী অঞ্চলভিত্তিক এনজিও সংস্থা ভারত থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে জেলার আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানাস্তর করে। পরে ওই গৃহবধূকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সিলেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (জেলা জজ) আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক বলেন, ‘স্ত্রীকে পতিতাবৃত্তির জন্য স্বামী ভারতে পাচার করে দেয়। ওই গৃহবধূর ভাই এ ঘটনায় ভগ্নিপতি ভুলু ও তার বোনের জামাই নাছির,অজ্ঞাতনামা অপর এক ব্যাক্তি সহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আদালত এ মামলা থেকে নাছিরকে অব্যাহতি এবং বুলবুল মিয়া ভুলুকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। এছাড়া আদালত ভুলুকে আরও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নাছির মিয়া (২৬) নামে অপর একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।